প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বাংলা

স্মরণীয় যাঁরা চিরদিন
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ রয়েছে বাংলা বিষয়ের ‘স্মরণীয় যাঁরা চিরদিন’ প্রবন্ধের ওপর আলোচনা।

প্রশ্ন: কোন শহিদ বুদ্ধিজীবী প্রথম পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান?
উত্তর: পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রথম দাবি জানান শহিদ বুদ্ধিজীবী ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। বাংলাদেশ ১৯৪৮ সাল থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে একত্র ছিল। আর তখন একটাই গণপরিষদ কার্যকর হতো। সেটি হলো পাকিস্তান গণপরিষদ।
যেহেতু বাংলাদেশের সব মানুষের ভাষা ছিল বাংলা, তাই ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান গণপরিষদে দাবি জানান যে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হোক। মূলত বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার এটাই প্রথম দাবি ছিল।

প্রশ্ন: কোন দিনটিকে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়? কেন?
উত্তর: ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ বাঙালি শহিদ হন। এর মধ্যে শক্তিমান, যশস্বী ও প্রতিভাবানদের ধরে নিয়ে ১৪ ডিসেম্বর হত্যা করা হয়। তাই প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।

প্রশ্ন: আমরা কেন চিরদিন শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করব?
উত্তর: মাতৃভূমির বিপদে যাঁরা এগিয়ে আসেন তাঁরা আমাদের কাছে চিরস্মরণীয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। এই যুদ্ধ ও স্বাধীনতা লাভের পেছনে অনেক মহান মানুষের অসীম অবদান রয়েছে। চিন্তা, বুদ্ধি, মেধা, সময় ও অর্থ দিয়ে তাঁরা সব সময় মানুষের কল্যাণ চিন্তা করেছেন। স্বাধীনতার জন্য তাঁরা নিজেদের জীবন পর্যন্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। আমরা তাঁদের চিরদিন স্মরণ করব।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি, তাঁরা দেশ ও মাতৃভাষার জন্য ত্যাগের মহান আদর্শ স্থাপন করে গেছেন। আমরা সেই আদর্শকে অনুসরণ করব। নিজেদের আদর্শ মানুষরূপে গড়ে তোলার জন্য সেই সব মানুষকে আমরা আদর্শরূপে গ্রহণ করব। এ জন্যই তাঁদের আমরা স্মরণ করব।

প্রশ্ন: আমরা কীভাবে শহিদদের ঋণ শোধ করতে পারি?
উত্তর: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হয়েছিলেন ৩০ লাখ নিরীহ বাঙালি। ১৯৭১ সালে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলেন। আজ আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি, তা ওই সব শহিদের অবদান। তাঁদের কাছে আমরা ঋণী। এই ঋণ শোধ করতে হলে আমাদের নিজেদের স্বার্থচিন্তার পরিবর্তন করতে হবে। দেশের কল্যাণের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। নিজেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা যদি দেশের সার্বিক কল্যাণ সাধন করতে পারি, তবেই শহিদদের ঋণ শোধ করা সম্ভব।
প্রশ্ন: রণদাপ্রসাদ সাহাকে কেন দানবীর বলা হয়?
উত্তর: এ দেশের সাধারণ মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন রণদাপ্রসাদ সাহা। দানশীলতার জন্য তাঁকে দানবীর বলা হয়।

প্রশ্ন: কোন সময়কে মুক্তিযুদ্ধের কাল বলা হয়?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত—এই নয় মাসকে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল। এই নয় মাস যুদ্ধ করার পর আমরা জয়ী হই, অর্জন করি আমাদের স্বাধীনতা।

প্রশ্ন: জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা কে ছিলেন? তিনি কীভাবে শহিদ হন?
উত্তর: জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন শহিদ বুদ্ধিজীবী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী এ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর বর্বর আক্রমণ চালায়। তারা এ দেশকে প্রতিভাশূন্য করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাড়িতেও হামলা চালায়। জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতাকে তারা টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে আনে। তারপর গুলি করে হত্যা করে। এভাবেই তিনি শহিদ হন।

প্রশ্ন: কোন তারিখে পাকিস্তানি সেনারা এ দেশের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে?
উত্তর: পাকিস্তানি সেনারা ছিল নিষ্ঠুর, নির্মম। তারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।

প্রশ্ন: দুজন শহিদ সাংবাদিকের নাম লেখো।
উত্তর: দুজন শহিদ সাংবাদিক হলেন শহীদ সাবের ও সেলিনা পারভিন।
 বাকি অংশ ছাপা হবে আগামীকাল
সিনিয়র শিক্ষক
আন-নাফ গ্রিন মডেল স্কুল, ঢাকা

Leave a comment